৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি প্রস্তুতি, কিভাবে পড়বেন, কি কি বই লাগবে।

Govt job preparation book Free govt job preparation govt job preparation book pdf government jobs preparation books in bangladesh govt job

৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি প্রস্তুতি


৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি প্রস্তুতি


একটি সরকারি চাকরি যেন একটি স্বপ্নএকটি পরিবারের চাওয়া, একটি সুরক্ষিত জীবনের নিশ্চয়তা আবার কারো কাছে স্বস্তির নিঃশ্বাস।  কিন্তু চাইলেই কি আর সরকারি চাকরি পাওয়া যায়? সরকারি চাকরি পেতে হলে দরকার পড়াশোনা এবং সময়ের যথাযথ প্রয়োগ তার সাথে দরকার সঠিক দিক নির্দেশনা।  তাই  আজকের লেখায় কিভাবে ৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিবেন তার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।



৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি কি?

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি বা থার্ড ক্লাস সরকারি চাকরি বলতে বুঝায় ১৩তম গ্রেড থেকে ১৭ তম গ্রেড পর্যন্ত যারা সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত। 

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির আবেদনের যোগ্যতাঃ

পদ ভেদে এসএসসি হতে ডিগ্রী/ অনার্স পাশ থাকলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনার এইচ এস সি পাশ হলেই চলবে।

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের বেতন কত?

আমরা আগেই জেনেছি যে তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের গ্রেড সীমা হচ্ছে ১৩তম থেকে ২০তম গ্রেড।  যারা তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি করেন তাদের বেতন গ্রেড অনুযায়ী কিছুটা পার্থক্য হয়ে থাকে। চলুন নিচে বিস্তারিত জেনে নেই

govt job salary scale 2015


তৃতীয় শ্রেণির চাকুরির সুযোগ সুবিধা কি

অন্যান্য গ্রেডের চাকুরিরর ন্যায় তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতা সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে।


বাড়ি ভাড়া
মূল বেতনের ৬০-৫০ শতাংশ হারে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার সাভার এলাকার জন্য। উপজেলা লেভেল মূল বেতনের ৪০-৪৫%

আরো পড়ুন -  Extended Guideline on Govt Bank Job Preparation [Step By Step]

চিকিৎসা ভাতা
মাসে কমপক্ষে হাজার ৫০০ টাকা। অবসরভোগীদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের কম বয়স্কদের জন্য মাসিক ভাতা হাজার ৫০০ টাকা। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য হাজার ৫০০ টাকা।


যাতায়াত ভাতা
দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কর্মরত চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর থেকে ২০ গ্রেডে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যাতায়াত ভাতা মাসে ৩০০ টাকা।

গাড়ির সুবিধা
সার্বক্ষণিক গাড়ির সেবার জন্য প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য নগদায়নের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। রাখা হয়েছে সুদ বিহীন গাড়ি কেনার জন্য সুবিধা।

শিক্ষা সহায়ক ভাতা
সকল শ্রেণীর চাকরিজীবীদের সন্তান প্রতি মাসে ৫০০ টাকা, সন্তানের জন্য হাজার টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড হতে বৃত্তি সুবিধা গ্রহনের ব্যবস্থা রয়েছে ১১-২০ তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য।টিফিন ভাতা
মাসে টিফিন ভাতা ২০০ টাকা। তবে যে সব চাকরিজীবী তাদের প্রতিষ্ঠান দুপুরের খাবার পান কিংবা দুপুরের খাবারের ভাতা পান তাদের জন্য টিফিন ভাতা প্রযোজ্য হবে না।
উৎসব ভাতা
সকল চাকরিজীবীদের জন্য প্রতি বছরে মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। একই সঙ্গে একজন অবসরভোগীর জন্য তার মাসিক নিট পেনশনের দ্বিগুণ হারে বছরে ২টি উৎসব ভাতা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।শ্রান্তি বিনোদন ভাতা
সকল শ্রেণীর চাকরিজীবীকে বর্তমান প্রচলিত প্রতি তিন বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি বিনোদন ভাতা হিসাবে মঞ্জুরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


ধোলাই ভাতা
৪র্থ শ্রেণীর চাকরিজীবীদের জন্য ধোলাই ভাতা মাসে ১০০ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে ড্রাইভারসহ দাপ্তরিক পোশাক সরবরাহ করা হয়।

কার্যভার ভাতা


কার্যভার ভাতার শতকরা হার অপরিবর্তিত রেখে সর্বোচ্চ সীমা মাসে হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।


পোশাক পরিচ্ছদ সুবিধা
প্রচলিত নিয়মে পোশাক পরিচ্ছদ প্রদানের সুবিধা চালু রাখা হয়েছে।

আরো পড়ুন- UCB Probationary Officer Preparation 2024


পাহাড়ি দুর্গম ভাতা
পার্বত্য এলাকায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ হাজার টাকা পাহাড়ি ভাতা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাওড়-বাওড়, দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে উপকূলীয় ভাতাও চালু করা হয়েছে।

ভ্রমণ ভাতা
বদলিজনিত ভ্রমণ ভাতা ২০১৬ সালের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক পুন: নির্ধারণ করা হয়েছে। বদলিজনিত কারণে প্রতি ১০০ কেজির জন্য প্রতি কি:মি: টাকা হারে এবং ডিএ নির্ধারণে মূল বেতনকে ভিত্তি ধরা হয়েছে।

বিশেষ ভাতা
বাংলাদেশ পুলিশ, ্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এসএসএফ ইত্যাদি বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য বিশেষভাতা বেতন কাঠামোর নির্ধারিত রয়েছে।অবসর ভাতা অন্যান্য সুবিধা
পেনশনযোগ্য চাকরিকাল প্রথম গ্রেড থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত ৯০ শতাংশ করা হয়েছে। সাধারণত ২৫ বছরের আগে স্বেচ্ছায় পেনশনে যাওয়ার সুযোগ নাই।

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি প্রস্তুতি


সম্মানিত পাঠক একটি সরকারি চাকরি পেতে দরকার যেমন কঠিন প্রস্তুতি তেমনি দরকার সঠিক দিক নির্দেশনা।  জব ভিউ এর পক্ষ থেকে আজকে থাকছে তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য নিজেকে যেভাবে প্রস্তুত করবেন তার সঠিক এবং কার্যকরী দিক নির্দেশনা।  তবে প্রস্তুতি গ্রহণের পূর্বে পরিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা উচিত। 

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির পরিক্ষা পদ্ধতি

যেকোনো সরকারি চাকরি পরিক্ষা পদ্ধতি একটা থেকে অন্যটি কিছুটা পার্থক্য থাকে। যেহেতু আমরা ৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি নিয়ে কথা বলবো তাই নিচে পরিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো।

তৃতীয় শ্রেণির চাকুরির পরিক্ষা প্যাটার্ন হলো টি। যথা:
) এমিসিকিউ পরিক্ষা ভাইভা
) এমসিকিউলিখিত ভাইভা।

এমসিকিউ পরিক্ষা:
এমসিকিউ পরিক্ষা সাধারণত ১০০ নাম্বারে হয়ে থাকে। কোন কোন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ৪০-১০০ এর ভিতরে নিয়ে থাকেন।


তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির এমসিকিউ প্রশ্ন প্যাটার্ন

অন্যান্য শ্রেনীর সরকারি চাকরির ন্যায় তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরিক্ষার জন্য প্রশ্ন করা হয় বাংলা ইংরেজি গনিত সাধারণজ্ঞান অন্যান্য বিষয় থেকে।
১০০ নাম্বারে পরিক্ষা হলে নিম্ন বর্নিত উপায়ে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
বাংলা - ২৫
ইংরেজি - ২৫
গণিত - ২৫
সাধারণজ্ঞান - ২৫

বিঃদ্রঃ এটি ভিন্ন হতে পারে। তবে এমন হবার সম্ভাবনাই বেশি।

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির লিখিত প্রশ্ন প্যাটার্নঃ

এমসিকিউ পরিক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয়। লিখিত পরীক্ষা -১০০ নাম্বারে হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় মূলত প্রশ্ন আসে বাংলা, ইংরেজিগণিত সাধারণজ্ঞান থেকে।
১০০ নাম্বারে পরিক্ষা হলে নিম্ন বর্নিত উপায়ে মানবন্টন করা হয়ে থাকে।
বাংলা - ২৫
ইংরেজি - ২৫
গণিত - ২৫
সাধারণজ্ঞান - ২৫

এই ছিলো প্রশ্ন প্যাটার্ন নিয়ে মোটামুটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা।  চলুন কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন সে সম্পর্কে আলোচনায় যাওয়া যাক।
তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি এমসিকিউ পরিক্ষা প্রস্তুতিঃ
এমসিকিউ পরিক্ষায় পাশ করতে হলে পড়াশোনার বিকল্প নাই। তবে পড়াশোনা করার আগে জানতে হবে কিকি পড়তে হবে। চলুন জেনে নেই তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য কি কি পড়তে হয়।

আমরা জানি পরিক্ষা হয়ে থাকে বাংলা ইংরেজি গণিত সাধারণজ্ঞান বিষয়ে।

বাংলা প্রস্তুতি :

৩য় শ্রেণীর পদ। সুতরাং প্রশ্ন হবে বাংলা সাহিত্য এবং ব্যাকরণ অংশ থেকে। 
৩য় শ্রেণীর পদের জবে বাংলা সাহিত্য অংশে কি কি পড়বেনঃ
বিভিন্ন লেখক এবং তাদের উল্লেখ্যযোগ্য সাহিত্য। জন্য চাইলে আপনারা অভিযাত্রী বাংলা বইটি পড়তে পারেন।
৩য় শ্রেণীর পদের জবে বাংলা ব্যাকরণ অংশে কি কি পড়বেনঃ
১। এক কথায় প্রকাশ।
২। বাগধারা।

৩। সন্ধি বিচ্ছেদ।

৪। বাংলা থেকে ইংরেজি ট্রান্সলেশন।

৫। শব্দের শুদ্ধ বানান।

৬। ভাবসম্প্রসারণ।

৭। কারক বিভক্ত।

৮। অন্যান্য।

তৃতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি ইংরেজি প্রস্তুতিঃ
আপনি চাকুরী নিয়োগ পরিক্ষায় কতোটা ভালো করবেন তার বৃহৎ অংশ নির্ভর করবে আপনার ইংরেজি দক্ষতার উপর। অংশে নিম্নে প্রদত্ত বিষয়গুলো অবশ্যই কভার করবেন।
1. Parts of Speech
2. Transformation
3. Idioms
4. Vocabulary
5. Clause
6. Basic gammers

৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি গণিত প্রস্তুতিঃ

নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই পড়ে যাবেন।
পাটিগণিত
) ঐকিক নিয়ম
) অংশীদারী
) ক্রয় বিক্রয়
) লাভ ক্ষতি
) সংখ্যা

বীজগণিত

) মান নির্ণয়
) লসাগু গসাগু
) লগ
) জ্যামিতির বেসিক

সাধারণজ্ঞান প্রস্তুতি

. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে।

. মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে।

. বর্তমানে চলমান উন্নয়ণ পকল্প নিয়ে।

. বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাল তারিখ।

. বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে।

. গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ নিয়ে।

. বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে।

. বিভিন্ন অন্তর্জাতিক সংস্থা নিয়ে।

১০. অন্যান্য।

শেষ কথাঃ

চাকুরির প্রস্তুতি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।  তবে আশা করা যায় যাদের লক্ষ্য ৩য় শ্রেণির সরকারি চাকরি তারা উল্লেখিত উপায়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারলে সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ।  সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।